ড. ইউনুস কি প্রতিবেশী শক্তিধর বন্ধু দেশকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন?

ড. ইউনুস কি প্রতিবেশী শক্তিধর বন্ধু দেশকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন?

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও উন্নয়নের পেছনে যে কয়েকজন ব্যক্তির নাম উঠে আসে, ড. মুহাম্মদ ইউনুস তাদের মধ্যে একজন। মাইক্রোক্রেডিটের মাধ্যমে তিনি দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূল ধারায় আনার চেষ্টা করেছেন। তবে বর্তমানে তার নেতৃত্বে দেশের আরও বড় অগ্রগতির প্রশ্নে একটি জটিল বিষয় উঠে আসে—প্রতিবেশী শক্তিধর বন্ধু দেশকে উপেক্ষা করা। বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় ভারত, চীন, এবং অন্যান্য শক্তিধর দেশের অবদান বড় এবং বহুমুখী। এ প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে: ড. ইউনুস কি এই দেশগুলোর প্রভাব এড়িয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন?

 

 

প্রতিবেশী দেশের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত ভূমিকা:

বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান অত্যন্ত কৌশলগত। ভারতের সাথে আমাদের দীর্ঘ সীমান্ত এবং চীনের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অনেক সময় দেখা যায়, প্রতিবেশী দেশগুলো তাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থে বাংলাদেশের উপর প্রভাব বিস্তার করতে চায়।

ভারতের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক, বিনিয়োগ, এবং অবকাঠামোগত সহযোগিতা বাংলাদেশের উন্নয়নে অপরিহার্য। অন্যদিকে, চীনের 'বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ' বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে বিশাল প্রভাব ফেলে। তাহলে কি এসব সম্পর্ককে উপেক্ষা করে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব?

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ:

বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের সাথে একটি কৌশলগত সমন্বয় থাকা জরুরি। বাণিজ্যিক সম্পর্ক থেকে শুরু করে নিরাপত্তা সহযোগিতা, এসব ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখানো হলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের স্থান ধরে রাখতে হলে শক্তিধর দেশগুলোর সাথে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করা জরুরি।

 

 

বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা

বাংলাদেশ একটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে, যেখানে ভারতের মতো শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ এবং চীনের মতো বৈশ্বিক শক্তির প্রভাব রয়েছে। ভারত ও চীনের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক দেশের সার্বিক অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য। এসব দেশের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নিরাপত্তা, এবং আন্তর্জাতিক প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মাইক্রোক্রেডিট ও অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন

ড. ইউনুসের মাইক্রোক্রেডিট মডেল মূলত অভ্যন্তরীণভাবে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের উপর গুরুত্ব দেয়। এ মডেল দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বনির্ভরতা এনে দিয়েছে, যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির জন্য বেশ উপকারী। তবে, শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ ক্ষমতায়ন দিয়েই কি দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব?

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গুরুত্ব

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ছাড়া একটি দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোতে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক, অবকাঠামোগত এবং রাজনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। এসব শক্তিধর দেশের প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয়ে কাজ করা অনেক সময় অবাস্তব হয়ে দাঁড়ায়।

ইউনুসের নেতৃত্বে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

ড. ইউনুসের মডেল বাংলাদেশের অর্থনীতির কিছু নির্দিষ্ট সেক্টরে সফল হলেও, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং কৌশলগত সম্পর্ক ছাড়া দেশের সামগ্রিক অগ্রগতি সম্ভব নয়। প্রতিবেশী শক্তিধর দেশের সাথে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।

ড. ইউনুসের নেতৃত্বে মাইক্রোক্রেডিট মডেল দেশকে অভ্যন্তরীণভাবে উন্নত করতে সাহায্য করেছে, তবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া বৃহত্তর উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রতিবেশী শক্তিধর দেশগুলোকে উপেক্ষা করা বাংলাদেশের স্বার্থে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, দেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হলে ড. ইউনুসকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্বের গুরুত্বও বিবেচনা করতে হবে।

 

Post Code : Mzkt4KaF4KaV4KeN4Kaf4KeLIDE3LCAyMDI0

photo

Robert Kottke


21.3k

Views

104

Following

42

Posts

Popular posts

Recent posts